Header Ads Widget

বিশেষ্য পদ | বিশেষত কাকে বলে? | Bangla Noun | পদ পরিচয় | বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি



বিশেষ্য পদ

বিশেষ্য পদ(NOUN): যে পদের দ্বারা ব্যক্তি, বস্তু, জাতি, গুণ,কার্য, সমষ্টি ইত্যাদির নাম প্রকাশিত হয়, তাকে বলা হয় বিশেষ্য পদ বলে(Noun) পদ। উদাহরণ: সূর্য, চন্দ্র, আকাশ, অজয়, বিজয়, পলাশ ইত্যাদি।

 বিশেষ্যের শ্রেণী বিভাগ—

 বিশেষ্যকে সাধারণ নয়টি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে, সেগুলি নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো: 

(ক) সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য (Proper) - যে বিশেষ্যপদে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি, স্থান, দেশ, নদী, পর্বত, সমদ্র, গ্রন্থ, প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির বিশেষ নাম বোঝায়, তাকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলে।  যেমন:  বঙ্কিমচন্দ্র, বেদ, বিবেকানন্দ, নিবেদিতা, ভারতবর্ষ, ইরান, মথুরা, তাজমহল, ভাগীরথী, হিমালয়, প্রশান্ত মহাসাগর, পৃথিবী, সূর্য, বাংলা, ইংরেজী, রামকৃষ্ণ মিশন, রোহিণী ইত্যাদি।

(খ) জাতিবাচক বিশেষ্য (Common ) — যে বিশেষ্যপদে কোনো জাতি বা এক ধর্মবিশিষ্ট সকল ব্যক্তি, বস্তু বা প্রাণীকে বোঝায়, তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে। উদাহরণ: হিন্দ, খ্রীষ্টান, মুসলিম (এক-একটি ধর্মের নাম) । সেরকমই—পশু, পক্ষী, কীট, পতঙ্গ, গোরু, বাঘ, বৃক্ষ, লতা, জৈন, জামনি, ব্রাহ্মণ আর্য, ভিল, ইংরেজ, ফরাসী ইত্যাদি।

(গ) বস্তুবাচক বিশেষ্য (Material ) - যে বিশেষ্যপদে সাধারণভাবে কোনো জিনিসের নাম বোঝায়, তাকে বস্তুবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন— জ্বল, ফুল, আকাশ, বাতাস, সন্দেশ, কালি, টাকা পয়সা, তৈল, ঘটি, বাটি, খাট, পালঙ্ক, সিমেনট, কাগজ, কলম ইত্যাদি। সাধারণতঃ বস্তুবাচক বিশেষ্যের সংখ্যা গণনা সম্ভব নয়, মেপে বা ওজন করে  পরিমাণ নিশ্চিত করতে হয়। কিন্তু বই-খাতা, পেনসিল-কলম, থালা-বাটি, খাট-পালঙ্ক ইত্যাদি সংখ্যাদ্বারা গণনা করা যায় বলে এদেরকে,  সংখ্যাত্মক বস্তুবাচক বিশেষ্য বলে।

(ঘ) সমষ্টিবাচক বিশেষ্য ( Collective)- যে বিশেষ্যপদে কোনো জাতিবাচক বিশেষ্যের সমষ্টি বোঝায়, তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: সভা, সংঘ, জনতা, সংস্থা, পঞ্চায়েত, শ্রেণী, গোষ্ঠী, নৌবহর, পাঠাগার, ঝাঁক, পাল, গুচ্ছ, স্তবক, বাহিনী, ত্রিফলা, পঞ্চবটী, সংসদ ইত্যাদি।

(ঙ) সংখ্যাবাচক বিশেষ্য (Cardinals) – এক, দুই, তিন প্রভৃতি সংখ্যাবাচক শব্দগুলি বিশেষ্যরূপে ব্যবহৃত হলে সংখ্যাবাচক বিশেষ্য বলে। ঊনিশে আর বিশে কী এমন তফাত ? আমি তোমাদের সাতেও নেই পাঁচেও নেই। “দশে মিলি করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ।”

(চ) গুণবাচক বিশেষ্য (Abstract ) - যে বিশেষ্যপদে প্রাণীর বা বস্তুর দোষ, গুণ, ধর্ম প্রকৃতি ইত্যাদি বোঝায়, তাকে গুণবাচক বিশেষ্য বলে। অহংকার (মনের নিকৃষ্ট অবস্থার নাম) মানুষের পতনের মূল । তাজমহলের সৌন্দর্য (গণের নাম) অতুলন। মেয়েটির চমৎকার বন্দ্বি (গুণের নাম)। সেইরূপ—ক্ষমা, মমতা, স্নেহ, মাধুর্য, তিক্ততা, কামনা, ঔদ্ধত্য, হিংসা, দ্বেষ, দান, করুণা, প্রতিভা, মহত্ত্ব, কুটিলতা, সাহস, পাপ, পুণ্য, হীনতা ইত্যাদি।

(ছ) অবস্থাবাচক বিশেষ্য (Abstract-Concrete Noun)- যে বিশেষ্য পদে প্রাণী বা বস্তুর অবস্থা বোঝায়,তাকে অবস্থাবাচক বিশেষ্য বলে। শৈশব সারল্যের ঋতু। স্বপ্নে আছে সর্ব চরাচর।” “দারিদ্র্যে নাহিক ভয়।” সেইরূপ-যৌবন, বার্ধক্য, মৃত্যু, দৈন্য, কষ্ট, স্বাচ্ছন্দ্য, স্বাস্থ্য, সম্পদ, দূরবস্থা, স্বাধীনতা, রোগ, জালা, যন্ত্রণা, সন্ধ্যা, রাত্রি, শান্তি ইত্যাদি ।

(জ) ভাববাচক বিশেষ্য (Abstract ) - যে বিশেষ্যপদে প্রাণীর মনের কোনো বিশেষ ভাব বোঝায়,তাকে ভাববাচক বিশেষ্য বলে। ক্রোধ ( মনের ভাব ) আমাদের চরম শত্রু। নৈরাশ্যে মন ভরে গেছে ? মনে আনন্দ আন, বেদনা আপনি হঠে যাবে। সেইরূপ—তৃপ্তি, সুখ, হর্ষ, উল্লাস, সমাধি, উন্মত্ততা, উন্মাদনা ইত্যাদি।

(ঝ) ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য (Verbal) – যে বিশেষ্য পদে কোনো কাজের নাম বোঝায়, তাকে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: গমন, চলন, বলন, আচরণ, আসা যাওয়া, লেখা, পড়া, লিখন, পঠন, অধ্যাপনা, দর্শন, মরণ, বাঁচন, খাওয়া, ঘাম ইত্যাদি।

** আচার্য" সনীতিকুমার গুণবাচক অবস্থাবাচক ও ভাববাচক বিশেষ্যকে গণ বা ভাববাচক বিশেষ্য বলিয়াছেন। কিন্তু গুণ , অবস্থা ও ভাব—এই তিনটির মধ্যে পার্থক্য আছে বইকি।



Thanks


Post a Comment

0 Comments