নিত্য সমাস

সংজ্ঞা :  যে সমাসে সমস্যমান পদগুলি নিত্য বা সবসময় সমাসবদ্ধ থাকে অর্থাৎ, যার ব্যাসবাক্য হয় না, ব্যাসবাক্য করতে হলে একই অর্থ বোঝায় এমন অন্য কোনো পদের সাহায্য নিতে হয়, তাকে নিত্যসমাস বলে। যেমন—কৃষ্ণ সর্প = কৃষ্ণসর্প। ব্যাসবাক্য ও সমাসবদ্ধ পদ এক। ব্যাসবাক্যের পদ সর্বদা সমাসবদ্ধ বলে ‘নিত্য’। লক্ষণীয় যে, ব্যাসবাক্য সমাসবদ্ধ থাকে বলে ‘নিত্যসমাসে ব্যাসবাক্য হয় না’ বলা হয়।

 নিত্য সমাসের উদাহরণ : অন্য যুগ = যুগান্তর; অন্য গতি = গত্যন্তর; অন্য স্থান = স্থানান্তর; অন্য দৃশ্য = দৃশ্যান্তর; দানের নিমিত্ত = দানার্থ; কেবল জ্ঞান = জ্ঞানমাত্র; কেবল দর্শন = দর্শনমাত্র; তাহা মাত্র = তন্মাত্র; জবাকুসুমের তুল্য = জবাকুসুমসঙ্কাশ; কেবল জল = জলমাত্র; কেবল নাম = নামমাত্র; অন্য মনু = মন্বন্তর; অন্য গ্রাম = গ্রামান্তর; দিন দিন = প্রতিদিন; অন্য লোক = লোকান্তর; এই ঘর = ঘরখানা; কেবল বলা = বলাবলি; পানের নিমিত্ত = পানার্থ। ঠিক এভাবে- কাঁচকলা, দাঁড়কাক, কালসাপ, টাকপোকা, ফিবছর, মাথাপিছু, দৃশ্যান্তর, মনাত্তর, পাঠান্তর, সীমান্ত ইত্যাদি।

মনে রাখার বিষয়: 

১। 'নিত্য' শব্দটির সাধারণ অর্থ হল— 'সতত’, ‘সর্বদা’, ‘প্রত্যহ।

২। নিত্য সমাসের সমস্যমান পদ দুটি নিত্য বা সর্বদা সমাসবদ্ধ থাকে না, তার ব্যাসবাক্য ও সমস্তপদ অবিকল এক হয়। যেমন— দাঁড়কাক = দাঁড় কাক।

৩। নিত্য সমাসের ব্যাসবাক্য করার সময় সমাসবদ্ধ পদ দুটির একটির পরিবর্তে সমার্থক অন্য একটি পদ ব্যবহার করা যায়। যেমন- দেশান্তর = অন্য দেশ।

৪। সমস্যমান পদগুলি পাশাপাশি থাকলেই নিত্য সমাস হয়। যেমন- দর্শনমাত্র = কেবল দর্শন, লোকটি = অন্য লোক, বইখানি = একখানি বই, গৃহান্তর = অন্য গৃহ।


ধন্যবাদ